শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

শ্বশুরের বক্তব্য ‘বানোয়াট ও মনগড়া’ বললেন মিন্নি

নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি

তরফ নিউজ ডেস্ক : বরগুনায় দুর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রে নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি তাকে জড়িয়ে শ্বশুরের দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

স্বামী রিফাত হত্যায় তার সম্পৃক্ততা আছে দাবি করে শ্বশুর দুলাল শরীফের দেওয়া বক্তব্যকে ‘বানোয়াট ও মনগড়া’ বলেছেন মিন্নি।

রোববার বেলা ১২টার দিকে মিন্নি তার বাবার বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

এদিকে মিন্নিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বরগুনায় মানববন্ধন হয়েছে।

গত ২৫ জুন বরগুনা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে (২৩) তার স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে আহত করে একদল লোক। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এ পর্যন্ত মামলার এজাহারভুক্ত ছয়জনসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা করেছে পুলিশ। হত্যা মামলার মূল আসামি সাব্বির আহম্মেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

এরই মধ্যে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এসে রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ তার ছেলেকে হত্যায় মিন্নির জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন।

দুলাল বলেন, “নয়নের সঙ্গে বিয়ের ঘটনা মিন্নি ও তার পরিবার ‘সুকৌশলে’ গোপন করে গেছে। ওই বিয়ে বহাল থাকা অবস্থায় শরিয়া বহির্ভূতভাবে মিন্নি তার ছেলেকে বিয়ে করেছেন। রিফাতের সঙ্গে বিয়ের পরও মিন্নি নয়নের বাসায় আসা-যাওয়া ও যোগাযোগ রক্ষা করতেন।”

রিফাত হত্যার আগের দিন ২৫ জুলাই মিন্নি নয়নের বাসায় গিয়েছিলেন। মিন্নি প্রতিদিন একা একা কলেজে গেলেও ২৬ জুলাই রিফাতকে ডেকে কলেজে নিয়ে গেছেন বলে দাবি করেন দুলাল।

তিনি মিন্নিকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানান সংবাদ সম্মেলনে।

দুলাল শরীফের বক্তব্যকে অসত্য দাবি করে রোবার মিন্নি বলেন, নয়ন বন্ডের সঙ্গে তার বিয়ে হয়নি। ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর নয়ন তাকে একটি ঘরে নিয়ে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছিল। গত দুই মাস আগে দুই পরিবারের কর্তাদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে রিফাত শরীফের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

“রিফাতের সঙ্গে বিয়ের পরে নয়ন সেই কাবিননামা দেখিয়ে আমাকে স্ত্রী হিসেবে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাতে থাকে।”

তিনি বলেন, বিয়ের পর তিনি তার স্বামীর সঙ্গেই কলেজে যাতায়াত করতেন। গত ২৬ জুন রিফাত তার বাবার বাড়ি থেকে মোটর সাইকেলে করে তাকে নিয়ে কলেজে নিয়ে যান। সকাল ১০টার দিকে তার শ্বশুর তাদের নিতে এসেছে বলে রিফাত জানান।

“কলেজ গেটে এসে শ্বশুরকে না দেখে আবার কলেজে যেতে চেয়েছিলাম। তখনই রিশান ফরাজীসহ হত্যাকারীরা রিফাতকে জাপটে ধরে কলেজের বাইরে রাস্তায় নিয়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিল-ঘুষি, পরবর্তীতে কোপানো শুরু করে। অস্ত্রের সামনেও তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি।”
মিন্নির বলেন, তিনি স্বামীর হত্যা মামলার এক নম্বর সাক্ষী এবং হত্যাকারীদের বিচার চান তিনি।

“অথচ আমার শ্বশুর দুলাল শরীফ ষড়যন্ত্রকারীদের প্ররোচণায় পড়ে আমাকে জড়িয়ে বানোয়াট কথা বলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ০০৭ গ্রুপটি অত্যন্ত শক্তিশালী। তারা নিজেদের বাঁচাতে হত্যাকাণ্ডের মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করছে।”
এদিকে সকাল ১১টার দিকে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে মিন্নিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বরগুনা প্রেসক্লাবের সামনে ‘সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে মানববন্ধন হয়েছে।

রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ, চাচা আবদুল আজিজ শরীফ, জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষযক সম্পাদক সুনাম দেবনাথ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মারুফ মৃধা মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com